দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায়
একজন পুরুষের জীবন পরিচালনার জন্য তার একজন নারীর
গুরুত্ব অনেক। তেমনি একজন নারীর জীবনে একজন পুরুষের গুরুত্ব অনেক।
এক কথায় নারী এবং পুরুষ একে অপরকে ছাড়া অপরিপূর্ণ। তাই আজকে এই পোস্টের মধ্যে দ্বীনদার পাত্রী চেনার উপায় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায়
দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায়
আপনি কি বিয়ে করার জন্য একজন দ্বীনদার মেয়ে খুঁজছেন। তাহলে এই পোস্টে অবশ্যই
আপনার জন্য। দ্বীনদার মেয়ে খোঁজার জন্য যে বিষয়গুলো অবশ্যই আপনার জানা
প্রয়োজন। যে সকল বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে আজকে আমরা এই পোস্টের মধ্যে তা
জানানোর চেষ্টা করছি। বিয়ে হল সারা জীবনের জন্য একটি পবিত্র বন্ধন। তাই দ্বীনদার
এবং ধৈর্যশীল মেয়ে না হলে সারা জীবন দুঃখ কষ্টের মধ্যেই কাটাতে হবে।
প্রকৃত সুখ পাওয়ার জন্য একজন দ্বীনদার মেয়ে প্রয়োজন।
মেয়ে দেখতে গেলে মেয়ের আচার আচরণ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন দ্বীনদার
কিনা। মেয়েকে এমন ধরনের প্রশ্ন করতে হবে যেগুলো ইসলামিক প্রশ্ন উত্তর দিতে
পারলে বুঝতে পারবেন মেয়ের মধ্যে দ্বীনদারী আছে কিনা। নামাজের প্রতি
আগ্রহ এবং এবাদত সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে বুঝতে পারবেন পাত্রীর দ্বীনদার
নাকি দ্বীনদারন নই। আশা করছি দ্বীনদার মেয়ের চেনার সম্পর্কে বোঝাতে
পেরেছি।
মেয়ে দেখতে গিয়ে কি ধরনের প্রশ্ন করতে হয়
বিয়ে একজন পুরুষের জীবনে একবারই আসে এজন্য পাত্রীকে কি ধরনের প্রশ্ন করতে
হয় এই সম্পর্কে ধারণা থাকে না। তাই আজকে পয়েন্ট আকারে দ্বীনদার মেয়ে
চেনার উপায় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করছি। মেয়েকে এবাদত এবং কোরআনের আলোকে
বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারেন। এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেই আপনি বুঝতে
পারবেন মেয়ের ইসলামিক জ্ঞান কতটুকু।
দ্বীনদার মেয়েকে যে ধরনের প্রশ্ন করতে হবেঃ
- প্রথমে জিজ্ঞেস করতে হবে কোরআন পড়তে পারে কিনা
- হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সপ্তাহে কয়দিন রোজা রাখতে
- যাকাত দেওয়ার নিয়ম কি
- ইসলামের পর্দার বিধান কি
- জুমার দিন কোন সূরা পড়তে হয়
- নফল নামাজের নিয়ত কিভাবে বাধতে হয়
- দিনে কত ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয়
- এবং কোন ওয়াক্তে কত রাকাত নামাজ পড়তে হয়
- ফরজ নামাজ মোট কত রাকাত
পাত্রীর নামাজের প্রতি আগ্রহ
দ্বীনদার মেয়ে নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাত্রীর নামাজের প্রতি আগ্রহ কেমন আছে সেটা জানা
খুবই জরুরী। কারণ একজন মুসলিম মেয়ে এবং দ্বীনদার মেয়ের প্রথম পরিচয় তার
নামাজ। নামাজের প্রতি আগ্রহ কেমন আছে সেটা লক্ষ্য করতে হবে। নামাজের প্রতি
আগ্রহ না থাকলে বুঝতে হবে সে দ্বীনদার মেয়ে নয়। কারণ একজন মুসলিমের
প্রথম নামাজের প্রতি আগ্রহ থাকা উচিত।
দ্বীনদার পাত্রী হওয়ার প্রধান শর্ত হল এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা করবে না। নামাজের প্রতি খুবই
সচেতন হবে। এজন্য দ্বীনদার পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে সে পাঁচ
ওয়াক্ত নামাজ পড়ে কিনা। আপনি পাত্রীকে জিজ্ঞেস করতে পারেন পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজের ফরজ গুলো কি কি? এবং কোন নামাজ কত রাকাত নামাজ পড়তে হয়। এ
ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে বুঝতে পারবেন সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে
কিনা।
পর্দাসীল ও ভদ্র মেয়ে
একজন দ্বীনদার মেয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার পর্দা করা এবং
ভদ্র আচরণ। একজন দ্বীনদার মেয়ে কখনো বেপর্দা ও অভদ্র আচরণ করতে
পারে না। ইসলামের দিক থেকে পর্দার গুরুত্ব অনেক এজন্য প্রত্যেকটি নারীকে
পর্দা করা উচিত। পর্দার মাধ্যমে একজন দ্বীনদার মেয়ের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব।
পর্দা করাটা যেমন জরুরী তেমনি ভাবে ভদ্র আচরণ জরুরী।
তাই পাত্রী দেখার সময় খেয়াল করতে হবে পাত্রীর পর্দাশীল পোশাক এবং
আচার আচরণ। একজন দ্বীনদার মেয়ের আচার-আচরণ খুবই নম্র এবং ভদ্র হয়ে
থাকে। পর্দাশীল ও ভদ্র আচরণের মাধ্যমে দ্বীনদার মেয়ের পরিচয় পাওয়া
যায়। কারণ কোরআনে নারীদের পর্দার কথা অনেক জায়গায় বলা হয়েছে। এবং তা না
করলে তার শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। এজন্য একজন দ্বীনদার নিয়ে পর্দা না
করে থাকতে পারে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কোরআন এবং হাদিসের চর্চা
দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায় এরমধ্যে শিক্ষকতা যোগ্যতা ও কোরআন হাদিসের চর্চা
কেমন করে তা জানা খুবই জরুরী। দ্বীনদার মেয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত
যোগ্যতা খুব একটা বেশি না হলেও কোরআন হাদিসের জ্ঞান ও চর্চা থাকতে হবে। তাই
আপনি পাত্রীকে প্রশ্ন করতে পারেন কোরআন হাদিসের চর্চা ঠিকভাবে করে
কিনা।
আরও জিজ্ঞেস করতে পারেন হাদিস ও কোরআন বিষয়ে কিছু প্রশ্ন। যেমন
কোরআনের কোন বড় সূরা মুখস্ত আছে কিনা। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কয়টি হাদিস
মুখস্ত আছে। বা কোন হাদিস সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন। যদি এ সকল প্রশ্নের উত্তর
সঠিকভাবে দিতে পারে তবে বুঝতে পারবেন নিয়মিত কোরআন এবং হাদিস চর্চাই অভ্যস্ত।
দ্বীনদার মেয়ের এটি একটি বড় গুণ।
পিতা মাতার প্রতি যত্নশীল
পৃথিবীতে আল্লাহ এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এরপরে পিতা-মাতার স্থান। কারণ
তারা আমাদেরকে খুব কষ্ট করে লালন পালন করে। তাই আমাদেরও দায়িত্ব পিতা-মাতার ওপর
যত্নশীল হাওয়া। এইজন্য একজন দ্বীনদার মেয়ের তার পিতা-মাতার
প্রতি যত্নশীল হওয়া খুবই জরুরী। পিতা-মাতার প্রতি যত্নশীল না হলে আল্লাহ তায়ালা
তার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে থাকে। এজন্য কোন দ্বীনদার মেয়ে পিতা মাতার যত্ন
নিতে আগ্রহী হয়।
এজন্য মেয়ে দেখার সময় লক্ষ্য রাখতে রাখতে হবে মেয়ে পিতা মাতার প্রতি
যত্নশীল কিনা। এক্ষেত্রে মেয়ের বাড়ির আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে
খোঁজখবর নিতে পারেন। সে তার পিতা-মাতার সাথে কেমন আচরণ করেন এবং তাদের প্রতি
কেমন যত্নশীল। একজন দ্বীনদার মেয়ে তার পিতা মাতার সাথে কখনো খারাপ
আচরণ করতে পারে না । এই বিষয়টা নিশ্চিত হতে পারলেই বুঝতে পারবেন
মেয়ে দ্বীনদার কিনা।
হারাম এবং হালালের প্রতি সচেতন
একজন দ্বীনদার মেয়ের বড় পরিচয় হারাম এবং হালালের প্রতি সচেতনতা। হারাম
খাবার খেয়ে বা হারাম কাজ করলে সেই পরিবারে কখনোই উন্নতি সম্ভব না। এইজন্য
পাত্রী নির্বাচনের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে মেয়ে হালাল এবং হারামের প্রতি সচেতন
আছে কিনা। একজন দ্বীনদার মেয়ে সবসময় হারাম কাজ এবং হারাম খাবার থেকে বিরত
থাকার চেষ্টা করে।
এজন্য মেয়েকে নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন হালাল এবং হারামের পার্থক্য কি । দ্বীনদার
মেয়ে হলে হালাল এবং হারামের পার্থক্য অবশ্যই জানবে এবং হালাল এবং হারামের
প্রতি সচেতন থাকবে। মেয়েটি যদি আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে। তবে
আপনি বুঝতে পারবেন মেয়েটি হালাল এবং হারামের প্রতি সচেতন কিনা।
ধৈর্যশীল ও ভদ্র আচরণ
একজন দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায় তার ধৈর্য। একজন দ্বীনদার মেয়ের
ধৈর্য থাকাটা খুবই জরুরি। কারণ মনে করুন আপনার বিবাহিত জীবনে হঠাৎ করে অভাব অনটন
শুরু হলো। এমন সময় কোন মেয়ে ধৈর্য ধরতে না পারলে সংসার টেকানো কষ্টকর।
সংসার জীবনে অভাব অনটন আসতেই পারে। এজন্য ধৈর্যশীল মেয়ে পাত্রী নির্বাচনে
খুবই জরুরী একটি বিষয়।
একজন দ্বীনদার মেয়ের এই গুণ থাকা জরুরী। আর দ্বীনদার মেয়েরা ধৈর্যশীল হয়ে
থাকে কারণ আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীল কে পছন্দ করে। দ্বীনদার মেয়ে অবশ্যই আল্লাহর
পছন্দকে গুরুত্ব দিবে। এজন্য দ্বীনদার মেয়েরা খুবই ধৈর্যশীল হয়ে
থাকে।
লেখক এর শেষ কথাঃ দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপাই
আজকের এই পোস্টটিতে দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর
চেষ্টা করেছি আশা করছি যারা বিয়ে করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য
খুবই উপকারে আসবে আজকের এই পোস্টটি। দ্বীনদার মেয়ে চেনার জন্য যে সকল
প্রশ্ন করা উচিত আজকের এই পোস্টে মধ্যে তা জানিয়েছি। দ্বীনদার মেয়ে চেনার
ক্ষেত্রে ধৈর্যশীল নামাজের প্রতি আগ্রহ ও প্রত্যাশীলতার প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে।
এ
সকল গুনগুলো কোন মেয়ের মধ্যে নেই থাকলে বুঝতে পারবেন মেয়েটি দ্বীনদার না।
পিতা-মাতার প্রতি সেবা যত্ন ও স্বামীর সেবা যত্নের প্রতি খেয়াল রাখে কিনা সেটা
লক্ষ্য করতে হবে তবেই দ্বীনদার মেয়ের পরিচয় পাওয়া যায়। আশা করছি বুঝতে
পেরেছেন দ্বীনদার মেয়ে চেনার উপায় সম্পর্কে।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url