দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন
আপনি যদি দশম শ্রেণীর ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন সম্পর্কে জানা উচিত। আজকের এই পোস্টটি মূলত দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য।
এই পোস্টে আমরা জানবো দশম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের দৈনিক কত ঘন্টা বা কখন কখন
পড়তে হবে সে সম্পর্কে। আপনি যদি আজকের এই পোস্টটি পড়ে এই উপায় গুলো
অবলম্বন করতে পারে তাহলে নিশ্চয়ই আপনি ভালো ফলাফল করতে পারবেন। তাহলে চলুন নিচে
বিস্তারিত জেনে নিই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন
দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন
আপনি যদি দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই জানা উচিত দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন কি। একজন ভালো ছাত্র বা ছাত্রী রুটিন মেনে
পড়াশোনা করে।এতে ভালো ফলাফল করা যায়। আপনি যদি একটি রুটিন করে সে অনুযায়ী
পড়াশোনা করতে পারেন তাহলে আপনি একজন ভালো ছাত্র বা ছাত্রী হতে পারেন। একজন
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর দৈনিক ১০ ঘন্টা পড়াশোনা করা উচিত।
আরও পড়ুনঃ থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
ধরুন আপনি দিনে ৮ ঘন্টা পড়াশোনা করতে চান। কিন্তু ৮ ঘন্টা তো আর এক
নাগারে পড়া সম্ভব না মূলত সেই কারণেই দৈনিক পড়ার রুটিন তৈরি করা
উচিত। আর আপনি যদি দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে তো অবশ্যই
আপনাকে দৈনিক পড়ার রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে। রুটিন মেনে পড়াশোনা করলে
শরীর স্বাস্থ্য এবং মন দুটোই ভালো থাকে এতে কম সময়ে অনেক কিছু সহজেই বোঝা যায়
এবং মনে রাখা যায়। তাহলে বুঝতে পারছেন দৈনিক পড়ার রুটিন কতটা
জরুরী।
দৈনিক কোন কাজগুলো করা উচিত
দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে এটা মাথায় রাখতে
হবে যে দৈনিক কোন কাজগুলো করা উচিত। আপনি যদি এটা ঠিক করতে না পারেন যে কখন
কোন কাজ করা উচিত তাহলে আপনি পড়ার রুটিন তৈরি করতে পারবেন না। একজন ছাত্রের
ঘুম থেকে উঠে সারাদিন কি কি করা উচিত সেগুলো জানা উচিত। আসুন ধাপে ধাপে জেনে
নিই।
- তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা
- সকালের ব্যায়াম করা
- নাস্তা করা
- নতুন কিছু শিখা
- বই পড়া
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার না করা
- পড়াশোনার প্রস্তুতি নেওয়া
- নতুন কিছু শেখা
- দৈনিক নতুন নতুন পরিকল্পনা করা
- সময় মত ঘুমাতে যাওয়া ইত্যাদি
আপনি যখন এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন তখন আপনার পড়াশোনা আরো সহজ হয়ে
যাবে। আপনার দৈনিক পড়ার রুটিন তৈরি করার জন্য উপরের এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে
পালন করা উচিত।
তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা
দশম শ্রেণীর দৈনিক পাড়ার রুটিনের মধ্যে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা
এবং পড়তে বসা। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে শরীর ও মন দুটোই ভালো
থাকে। সকাল বেলা মস্তিষ্ক একেবারে ফ্রেশ থাকে তাই সে সময় পড়তে বসলে সব
পড়াই মনে থেকে যায়।
আপনি যদি দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে ভোর চারটায় উঠে পড়তে বসা
উচিত এবং সকাল ৭ টায় পড়াশোনা বন্ধ করা উচিত। আপনি যদি দিনে ১২ ঘন্টা
পড়েন এবং যদি ভোর চারটা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারেন তাহলে ওই ১২
ঘন্টার চেয়ে এই তিন ঘন্টায় বেশি উপকার আসবে। এর মূল কারণ হলো ঘুম থেকে
ওঠার পর মস্তিষ্ক একেবারে পরিষ্কার থাকে এবং মস্তিষ্ককে যা কিছু দেওয়া যায় তা
সহজেই ধরে রাখতে পারে।
সকালের ব্যায়াম করা
দৈনিক পড়াশোনার রুটিনের মধ্যে সকালের ব্যায়াম করা টা খুবই
জরুরী। ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে। আর শরীর ভালো থাকলে মন ও ভালো
থাকে আর যদি মন ভাল থাকে তাহলে মস্তিষ্ক ফ্রেশ থাকে। তাই নিশ্চয়ই বুঝতে
পারছেন পড়াশোনার রুটিনের মধ্যে সকালের ব্যায়ামটা কতটা উপকারী।
ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের অলসতা দূর হয় এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া
যায়।আবার এই ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে অনেক সাহায্য করে ফলে শিক্ষার্থীর
পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের
অনেক উপকার হয়।শরীর ভালো থাকলে পড়াশোনা করতেও ভালো লাগে এবং অল্প সময় পড়া
কমপ্লিট করা যায়।তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সকালের ব্যায়াম করা কতটা
জরুরী।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার না করা
আপনার দৈনন্দিন জীবনের রুটিনের মধ্যে অবশ্যই এই বিষয়ে সচেতন থাকতে
হবে। বিষয়টি হলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার না করা। তবে ক্ষেত্র বিশেষে
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হয়। কেননা এখন অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করা
থেকে শুরু করে পড়াশোনার সবকিছুই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায়। যেকোনো
প্রশ্নের উত্তর খুব সহজেই পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃমরিঙ্গা পাউডার এর উপকারিতা
তবে এর ক্ষতিকর দিক হলো সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সময় নষ্ট করা। যেমন গান
বাজনা, নাটক, মুভি ইত্যাদি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সকল জিনিসগুলো নিয়মিত
দেখলে পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ উঠে যায় ফলে পড়াশোনার অনেক ক্ষতি
হয়। সোশ্যাল মিডিয়া আপনার মস্তিষ্ককে দুর্বল করে দেয় তাই যতটা সম্ভব
এ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকাই উচিত।
পড়াশোনার প্রস্তুতি নেওয়া
আপনি যদি দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে পড়াশোনার বিষয়ে বেশি
সময় ব্যয় করতে হবে। আপনাকে সব সময় পড়াশোনার প্রস্তুতি নিতে
হবে। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে অযথা সময় নষ্ট হবে এমন কাজগুলো থেকে বিরত
থাকতে হবে। অবসর সময় পেলেই পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রাখতে
হবে। পড়াশোনার জন্য প্রথমে আপনাকে নির্দিষ্ট বিষয় ভাগ করে নিতে
হবে।
আপনাকে মাথায় রাখতে হবে কখন কোন বিষয় নিয়ে পড়বেন। এবং সেই সময় সেই
বিষয় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবেন। এবং আপনাকে কোন বিষয় নিয়ে
কতক্ষণ পড়বেন সে বিষয়েও রুটিন তৈরি করতে হবে। তবে সারাদিন শুধু পড়াশোনা
নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। কেননা শরীরের বিশ্রামের প্রয়োজন আছে তাই
পড়াশোনার পাশাপাশি ঘুম এবং বিশ্রাম দুটোই ঠিক রাখতে হবে।
নতুন কিছু শেখা
আপনাকে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে প্রতিদিন আপনাকে নতুন কিছু শিখতে
হবে যা আপনার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। নতুন কিছু শেখার
জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি চাইলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন কিছু নিয়ে
সার্চ দিয়ে সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। দৈনিক নতুন নতুন জ্ঞান
অর্জন করা খুবই প্রয়োজন।
আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করছেন সে বিষয়ে বেশি বেশি জানার চেষ্টা করুন। এতে
পড়াশোনার প্রতি মর্যাদা বাড়বে। নতুন কিছু শিখলে খুবই ভালো লাগে এবং
দৈনন্দিন জীবনে কাজে আসে তাই পড়াশোনার মধ্যে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করা
উচিত। শেখার কোন শেষ নেই তাই সব সময় বা পড়াশোনার পাশাপাশি নতুন নতুন কিছু
শেখার চেষ্টা করা উচিত।
দৈনিক ১০ ঘণ্টা পড়ার রুটিন
দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন আপনার জানা খুবই প্রয়োজন যদি আপনি দশম শ্রেণীর
শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন। আপনি কি জানেন একজন ভালো শিক্ষার্থীর দৈনিক কত ঘন্টা
পড়াশোনা করা উচিত। না জানলে চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি আপনাকে জানিয়ে
দিচ্ছি। আসলে একজন ভালো শিক্ষার্থীর এবং সে যদি হয় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী
তাহলে তাকে প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘন্টা পড়াশোনা করা উচিত।
এখন আমরা দৈনিক ১০ ঘন্টা পড়ার রুটিন জানব। পড়াশোনা করার উত্তম সময় হলো
ভোরবেলা।আপনি যদি ভালো ফলাফল করতে চান তাহলে এই নিয়ম মেনে পড়াশোনা চালিয়ে
যাওয়া উচিত। ভোর চারটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত টানা তিন ঘন্টা। এবং
দুপুর বারোটা থেকে দুইটা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টা।আবার সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে
সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত টানা তিন ঘন্টা। আবার রাত নয়টা থেকে রাত এগারোটা
পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টা। সর্বমোট দশ ঘন্টা, এই নিয়মে আপনি যদি
পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন তাহলে ভালো ফলাফল নিশ্চিত।
সময় মত ঘুমাতে যাওয়া
সারাদিন দশ ঘন্টা পড়াশোনা করার পর নিশ্চয়ই আপনি অনেক ক্লান্ত হয়ে থাকবেন। তাই
আপনার সময় মতো ঘুমাতে যাওয়া উচিত। ঘুম মানুষের মস্তিষ্ককে রিফ্রেশ করে
দেয়। এতে মস্তিষ্ক পরিষ্কার থাকে এবং মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করতে
পারে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি ঘুমটাও ঠিকঠাক পূরণ করা উচিত। একজন
মানুষের দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
ঘুম এমন একটি জিনিস যা মানুষের খুবই প্রয়োজন। কোন মানুষ যদি একনাগারে
সাত দিন না ঘুমায় তাহলে সে মারা পর্যন্ত যেতে পারে। অনেক সময় মানুষ
ঠিকঠাক না ঘুমালে পাগল হয়ে যেতে পারে। তাই সারাদিন পড়াশোনা করার পর
মস্তিষ্ককে ফ্রেশ রাখতে হবে। আর মস্তিষ্ককে ফ্রেশ রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে
দৈনিক অন্তত ছয় ঘন্টা ঘুমাতে হবে। তবে আট ঘন্টা ঘুমানো উত্তম।
শেষ কথাঃ দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন
এতক্ষণ আমরা দশম শ্রেণীর দৈনিক পড়ার রুটিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আপনি
যদি দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে
আসবে। এই পোস্টে আমরা দৈনিক ১০ ঘন্টা কখন কখন করতে হয় সে সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভালো শিক্ষার্থী হতে হলে অবশ্যই দৈনিক এই পড়ার
রুটিন মেনে চলা উচিত।
আমার মতে আপনি যদি একজন দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে উপরের আলোচনা
গুলো মাথায় রাখা উচিত। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মস্তিষ্ককে দুর্বল করে দেই
তাই পড়াশোনার ক্ষতি করতে না চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা
উচিত। তবে পড়াশোনার জন্য যখন যখন সোশ্যাল মিডিয়া দরকার তখন সোশ্যাল
মিডিয়া ব্যবহার করা প্রয়োজন। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কিভাবে দৈনন্দিন
জীবনে পড়ার রুটিন তৈরি করা উচিত। বিভিন্ন তথ্য জানতে
এখানে ক্লিক করুন।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url